গৌরনদী প্রতিনিধি ॥ দীর্ঘ সাড়ে চারশো বছরের পূরানো বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী “বার্থী তাঁরা মায়ের মন্দির” এর বার্ষিক কালীপূজা আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত নয়ানভিরাম মন্দিরটিকে এ উপলক্ষে এবার সাজানো হয়েছে বর্নিল সাজে। যা দেখে মনে মন জুরিয়ে যাচ্ছে মন্দির অঙ্গনে আশা ভক্ত ও দর্শনার্থীদের। বার্থী তাঁরা মায়ের মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক ও ট্রাষ্টী প্রণব রঞ্জন দত্ত (বাবু দত্ত) জানান, “বার্থী তাঁরা মায়ের মন্দির”টি আমাদের দেশের সবচাইতে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী একমাত্র তাঁরা মন্দির। এটি প্রায় সাড়ে চারশো বছরের পুরনো একটি ঐতিহাসিক জাগ্রত মন্দির। তিনি বলেন, এ মন্দিরকে উপলক্ষ করে গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়ন এলাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে “বার্থী তাঁরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তাঁরাকুপি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং তাঁরাকুপি নামে একটি গ্রামেরও নামকরন করা হয়েছে। বাংলা ১১১সালে বরিশালের বিখ্যাত জমিদার রাম লাল ভট্রাচার্য “তাঁরা মায়ের মন্দিরটির জন্য একটি পাঁকা ভবন নির্মান করে দেন। পরবর্তীতে বরিশালের অন্যতম দানশীল ব্যত্তিত্ব বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার ও বরিশালের বিশিষ্ট শিল্পপতি বিজয় কৃষ্ণ দে’র আর্থিক সহায়তায় পূনঃনির্মিত হয়। তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় “বার্থী তাঁরা মায়ের মন্দির”টি এখন একটি সুরম্য অট্রালিকার ওপর চোখ ধাধানো নয়নাভিরাম দৃশ্যের অপরুপ সৌন্দর্যে ঘেরা একটি দৃষ্ঠিনন্দন মন্দিরে রুপ লাভ করেছে। পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতসহ নানা দেশ ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরের বিভিন্ন জেলার তাঁরা মায়ের ভক্তদের জন্য একটি তীর্থস্থান এ মন্দিরটি। উপমহাদেশের প্রসিদ্ধ সার্বজনীন মন্দিরগুলোর মধ্যেও অন্যতম এটি বলে দাবি তার। এ মন্দিরটি’র পুজা উদ্যাপন কমিটির সহ সম্পাদক সাংবাদিক সঞ্জয় কুমার পাল জানান, অশান্ত বিশ্বে আজ পারস্পারিক হানাহানি। করোনার মহামারি থেকে রক্ষা পেতে মানব জীবন মোহময় ও অন্ধকারছন্ন। এ মোহময় অন্ধকার দুর করতে জীবনে দুঃখ মোচন ও শান্তি অর্জনের এবং জগতের মঙ্গলার্থে প্রতি বছর বাংলা ২১ ফাল্গুন ব্যাপক পরিসরে বর্নাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে তাঁরা মায়ের মন্দিরের বাৎসরিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তিনি আরও জানান, আজ শনিবার সকাল থেকে কালী পূজা শুরু হবে। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত অনিল চন্দ্র মৈত্র পূজা-অর্চনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন। আজ (শনিবার) সকালে চন্ডিপাঠ ও শীতলা পূজা, দুপুরে বলিদান, বিকালে গীতাপাঠ, সন্ধ্যায় মায়ের সামনে আরতি প্রতিযেগীতা, রাতে প্রসাদ বিতরণ ও শিবাভোগ, গভীর রাতে ধর্মীয় গান অনুষ্ঠিত হবে। পূজা উপলক্ষে মন্দির অঙ্গনকে বর্নিল আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হতে মন্দির ভক্তরা এখানে আসতে শুরু করেছে। গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন জানান, পূজার দিন মন্দির অঙ্গনসহ আসপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
Leave a Reply